শখের বসে মানুষ কত কিছুই না করে। সেই শখের বসেই ১৮ মাসে তৈরি করলেন বিমান। শুধু বিমান তৈরিই নয়, সেই বিমানে পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন লন্ডন, জার্মানিসহ ইউরোপের নানা দেশে। কিন্তু কে এই বিমান নির্মাতা এবং কীভাবেই-বা এই অসম্ভবকে সম্ভব করলেন তিনি?

অশোক আলিসেরিল থামারাকসান, ভারতের কেরালার আলাপুঝার বাসিন্দা। তিনি তৈরি করেছেন ৪ আসনের একটি ছোট বিমান। নাম দিয়েছেন নিজের ছোট মেয়ে দিয়ার নামে। বিমানটির নাম ‘জি-দিয়া’। বিমানটি তৈরির মাধ্যমে তিনি তাক লাগিয়েছেন বিশ্বকে। জানা যায়, অশোক প্রাক্তন বিধায়ক এভি থামারাকসানের ছেলে। তিনি যন্ত্র প্রকৌশলী। ২০০৬ সালে কেরলা থেকে পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে। সেখানে পড়াশোনা শেষে কাজ করেন ফোর্ড মোটর কোম্পানিতে।

তিনি কীভাবে বিমান তৈরির ধারণা পেয়েছিলেন জানতে চাইলে গণমাধ্যমে অশোক জানান, ২০১৮ সালে পাইলটের লাইসেন্স পাওয়ার পর আমি ভ্রমণের জন্য দুই সিটের ছোট বিমান ভাড়া করতাম। কিন্তু আমার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। তাই আমার চার আসনের বিমানের প্রয়োজন ছিলো। কিন্তু তা সহজে পাওয়া যেত না, আর গেলেও সেটি খুব পুরনো ছিলো। এই অসুবিধেই আমাকে গবেষণা করতে উৎসাহিত করেছিলো।

তার আগে থেকেই বিমান তৈরির ইচ্ছা থাকায় ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানসবার্গের একটি বিমান কারখানাও পরিদর্শন করেন তিনি। সেখানে তিনি স্লিং টিএসআই (Sling TSI) নামে একটি নতুন বিমান লঞ্চ করার বিষয়ে জানতে পারেন।

তারপর সেখান থেকেই নিজের জন্য প্রয়োজনীয় কিট অর্ডার করেন এবং একটি ওয়ার্কশপ তৈরি করেন। প্রয়োজনীয় কিটগুলো আসতেই তিনি বিমান তৈরির কাজে লেগে পড়েন। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি নির্মাণকাজ শেষ করতে সক্ষম হন এবং প্রথম ২০ মিনিটের একটি ছোট ফ্লাইট পরিচালনা করেন। মে মাসে এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেয়েছেন তিনি। অশোকের বিমানটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ রুপি।

অশোক জানান, করোনা মহামারিতে হাতে প্রচুর সময় এবং এই সময়ের সঞ্চিত অর্থ তিনি এই কাজে ব্যয় করেন। তিনি আরও বলেন, সহকর্মীদের আমাকে সাহায্য করার কথা থাকলেও করোনা মহামারির কারণে তারা তা করতে পারেনি। তবে আমিও থেমে থাকিনি। আমাকে একা সব কাজ করতে হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে প্রথম ফ্লাইট পরিচালনা করি এবং মে মাসে এভিয়েশনের অনুমতি পেয়ে যাই।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি